Chapter 01 : ই-কমার্স ব্যবসায়
যা যা জানতে পারবেনঃ
- ই-কমার্স কি?
- ই-কমার্স বিজনেস কি এবং কিভাবে এটি কাজ করে?
- ই-কমার্স ব্যবসার প্রকারভেদ
- M-Commerce
- Enterprise E-commerce
- Social Media E-commerce
- ই-কমার্স ব্যবসায়ীর সুবিধা ও অসুবিধা
- ই-কমার্স ব্যবসায় সফল হওয়ার মূলমন্ত্র
- ই-কমার্স ব্যবসার ভবিষ্যৎ এবং পরিসংখ্যান
- ই-কমার্স ব্যবসা শুরু করার ধাপ
অ্যামাজন ই-কমার্স নিয়ে কিছু কথাঃ
সর্বপ্রথম আমাজন ই-কমার্স নিয়ে কথা বলার আগে ই-কমার্স নিয়ে কিছু কথা জেনে আসি:
ই-কমার্স কি?
E-commerce বা online commerce শব্দের পূর্ণ অর্থ হলো electronic commerce অর্থাৎ ইন্টারনেট বা অনলাইন ব্যবহার করে যেকোনো পণ্য কেনা-বেচা করার প্রক্রিয়াকে বলা হয় ই-কমার্স। এককথায়, ই-কমার্স হলো এমন একটি মাধ্যম যার মাধ্যমে পণ্য ক্রয় ও বিক্রয় করা যায়। বর্তমানে অনলাইনের যুগে ছোট বড় সকল কোম্পানিকে ই-কমার্স বিশ্বব্যাপী দ্রুততার সাথে পণ্য ক্রয় বিক্রয় করতে সাহায্য করে।
ই-কমার্স বিজনেস কি?
ই-কমার্স ব্যবসায় হলো এমন এক ধরনের ব্যবসা যেখানে অনলাইনের মাধ্যমে পণ্য ক্রয়-বিক্রয় করে মুনাফা অর্জন করা হয়। ই-কমার্স ব্যবসায় পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য শুধুমাত্র একটি ওয়েবসাইট বা অন্য কোনো অনলাইন মাধ্যম ব্যবহার করা যাবে। যেমন—কেউ একটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে পণ্য বিক্রয় করলেও ই-কমার্স হবে। আবার বিভিন্ন অনলাইন চ্যানেল যেমন অ্যামাজন, সোশ্যাল মিডিয়া, ইমেইল বা অন্য কোনো মাধ্যমে পণ্য বিক্রয় করলে সেটিও ই-কমার্স ব্যবসায়ের আওতাধীন হবে।
ই-কমার্স মাধ্যম বা চ্যানেল কি?
ক্রেতা এবং বিক্রেতাকে সংযুক্তকারী মাধ্যম বা চ্যানেলকে বলা হচ্ছে ই-কমার্স চ্যানেল। এখানে বিক্রেতা বিভিন্ন রকম পণ্য প্রদর্শন করবে, পণ্যের গুণাগুণ তুলে ধরবে, পণ্য সরবরাহের সময় ও মূল্য তুলে ধরবে এবং ক্রেতা তার পছন্দ অনুযায়ী পণ্য ক্রয় করবে।
এরকম কিছু জনপ্রিয় ই-কমার্স মাধ্যম হল—
- অ্যামাজন
- ওয়ালমার্ট
- সপিফাই
- ফ্লিপকার্ট
- ইভ্যালি
- দারাজ
ই-কমার্স ব্যবসায় কিভাবে কাজ করে?
ই-কমার্স ব্যবসায় মূলত ক্রেতা এবং বিক্রেতাকে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে একত্রিত করে।
উদাহরণ হিসেবে বলা যায়—বিক্রেতা একটি ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে তার পণ্যের গুণাগুণ, ডেলিভারি টাইম, ক্রয়মূল্য এবং মূল্য পরিশোধের মাধ্যম তুলে ধরবে। যখন কোনো ক্রেতা পণ্য ক্রয় করবে, তখন তাকে একটি কনফার্মেশন ইমেইল বা এসএমএসের মাধ্যমে জানানো হবে যে তার পণ্যটি সফলভাবে ক্রয় করা হয়েছে।
এই প্রক্রিয়ায়—
- পণ্য ক্রয়ের তারিখ
- পণ্যের নাম
- মূল্য
- ডেলিভারি ট্র্যাকিং নাম্বার
- পণ্যটি পৌঁছানোর সময় এবং অন্যান্য শর্ত উল্লেখ থাকবে।
ই-কমার্সের প্রকারভেদ
বর্তমানে বিভিন্ন ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম রয়েছে। নিচে কয়েকটি উল্লেখ করা হলো—
M-Commerce
যে ই-কমার্স লেনদেন মোবাইলের মাধ্যমে হয়ে থাকে তাকে মোবাইল কমার্স বা এম-কমার্স বলে। ২০২৩ সালে প্রায় ৪৩ শতাংশ খুচরা বিক্রয় সম্পূর্ণ হয়েছে মোবাইল কমার্সের মাধ্যমে।
Enterprise E-commerce
বড় কোনো কোম্পানি বা অর্গানাইজেশন থেকে পণ্য ক্রয়-বিক্রয় করাই হলো এন্টারপ্রাইজ ই-কমার্স। এখানে বড় কোম্পানিগুলো তাদের ব্র্যান্ডেড পণ্য সরাসরি অনলাইন কাস্টমারের কাছে বিক্রয় করে অথবা তাদের অনুমোদিত ডিলারের কাছেও বিক্রয়ের অনুমতি দেয়।
Social Media E-commerce
বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যেমন ফেসবুক, টুইটার, টিকটক ইত্যাদি ব্যবহার করে পণ্য ক্রয়-বিক্রয় করার প্রক্রিয়াকেই বলা হয় সোশ্যাল মিডিয়া ই-কমার্স।
ই-কমার্স ব্যবসায়ের সুবিধা ও অসুবিধা
ই-কমার্স ব্যবসায়ীর সুবিধা
চলুন জেনে নেই ই-কমার্স ব্যবসায়ীরা কী ধরনের সুবিধা পেতে পারেন:
- খুব সহজে পণ্য বিক্রয়ের সুযোগ
- দ্রুত বর্ধনশীল ব্যবসা
- পরিচালন ব্যয় কম
- কাস্টমারের সাথে সরাসরি সংযোগ
- স্বল্প পুঁজি নিয়ে বিশ্বব্যাপী পণ্য বিক্রয়ের সুযোগ
ই-কমার্স ব্যবসায়ীর অসুবিধা
চলুন জেনে নেই ই-কমার্স ব্যবসায়ীরা কী ধরনের অসুবিধার সম্মুখীন হতে পারেন:
- টেকনিক্যাল সমস্যা
- সময়মত পণ্য ডেলিভারি না হওয়া
- ডেলিভারি চেইন ম্যানেজমেন্ট জটিলতা
- উচ্চ প্রতিযোগিতা
ই-কমার্স ব্যবসায় সফল হওয়ার মূলমন্ত্র
ই-কমার্স ব্যবসায় সফল হওয়ার জন্য নিম্নলিখিত বিষয়গুলো মেনে চলতে হবে:
- মানসম্মত পণ্য প্রদান
- কাস্টমারের চাহিদা বুঝে পণ্য নির্বাচন
- সময়মতো পণ্য ডেলিভারি
- আকর্ষণীয় মার্কেটিং এবং প্রমোশনাল অফার
- গ্রাহক সেবার মান উন্নত করা
ই-কমার্স ব্যবসায়ের সম্ভাবনা ও পরিসংখ্যান
ই-কমার্স ব্যবসার ভবিষ্যৎ অত্যন্ত সম্ভাবনাময়। উদাহরণস্বরূপ—
- ২০২৩ সালে ই-কমার্স ব্যবসার গ্লোবাল মার্কেট সাইজ ছিল প্রায় ৫.৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার।
- ২০৩০ সালের মধ্যে এই সংখ্যা ১০ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
- মোবাইল এবং সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের কারণে ই-কমার্সে নতুন নতুন গ্রাহক যুক্ত হচ্ছে।
ই-কমার্স বিজনেস কিভাবে শুরু করব?
যেকোনো ধরনের পণ্য দিয়ে আপনি ই-কমার্স ব্যবসা শুরু করতে পারেন। যেমন—
- বই
- ফ্যাশন পণ্য
- গৃহস্থালির সরঞ্জাম
- সফটওয়্যার বা ডিজিটাল সার্ভিস
ই-কমার্স ব্যবসা শুরু করার ধাপ
- ই-কমার্স ব্যবসা এবং পণ্যের মার্কেট রিসার্চ করা
- নির্ধারিত পণ্যটি যেকোনো ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে অন্তর্ভুক্ত করা
- পণ্যের ছবি, গুণাগুণ, ডেলিভারি সময়, এবং আকর্ষণীয় মূল্য নির্ধারণ করে পণ্য প্রদর্শন করা
- পণ্য সরবরাহ বা ডেলিভারি করার মাধ্যম নির্বাচন
- বিভিন্ন রকম প্রমোশনের মাধ্যমে পণ্য বিক্রয়